*#Give me an educated mother, I will give you an educated nation ~Nepolean. *#Feel youself, Know yourself, you will know the world. *#Self confidence is the best power to improve. *#Education is the backbone of a nation. *#If you want to destroy a nation, destroy their all libraries. *#God is kind. *#Men is born to be free.

Monday, January 29, 2018

কৃত্রিম উপগ্রহ

কৃত্রিম উপগ্রহ (Artificial Satelite)
বিজ্ঞান প্রতিনিয়তই তার নিত্যনতুন আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে পৃথিবীকে আমাদের সামনে নতুন নতুন ভাবে উপস্থাপন করছে । ফলে উন্নত হচ্ছে মানুষের জীবন যাপন পদ্ধতি । আজকে আমরা পৃথিবীর এক প্রান্তে থেকে আরেকপ্রান্তের মানুষের সাথে মুহুর্তের মধ্যেই যোগাযোগ স্থাপন করতে পারছি। ফলে সহজ হচ্ছে ব্যবসা বাণিজ্য । এমনকি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্থাপনও সহজতর হচ্ছে। আর টেলিকমিউনিকেশন এর এই অতিদ্রুততার পেছনে যে মহান আবিষ্কারটির ভূমিকা অসামান্য সেটি হচ্ছে কৃত্রিম উপহগ্রহ। আজকের এই সংক্ষিপ্ত পরিসরের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদেরকে কৃত্রিম উপগ্রহ সম্পর্কে কিছু তথ্য জানাব। কৃত্রিম উপগ্রহ বা আর্টিফিসিয়াল স্যাটেলাইট সম্পর্কে জানার আগে সৌরজগত সম্পর্কে জানা প্রয়োজন । সৌরজগত সৃষ্টির বহু তত্ত্বের মধ্যে অন্যতম তত্ত্ব হল বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব। এই তত্ত্ব অনুযায়ী দুটি অতিকায় বিশালাকার নক্ষত্রের মধ্যে সংঘর্ষের ফলে সৃষ্টি হয়েছে সৌরজগতের । সেই সাথে সৃষ্টি হয়েছে অন্যান্য গ্রহ উপগ্রেহর । এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক গ্রহ উপগ্রহ বলতে কি বোঝায়? সাধারণত সূর্যকে কেন্দ্র করে একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে যেসব বস্তু একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তুর অন্তুর একটি নির্দিষ্ট দিক বরাবর ঘুরতে থাকে তাদেরকে গ্রহ বলে। অপরদিকে যেসব বস্তু গ্রহকে কেন্দ্র করে একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর একটি নির্দিষ্ট দিক বরাবর ঘুরতে থাকে তাদেরকে উপগ্রহ বলে। যেমন- চাঁদ পৃথিবীকে কেন্দ্র করে পৃথিবীর চারিদিকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর ঘুরতে থাকে এজন্য চাঁদ পৃথিবীর একটি উপগ্রহ। আবার মঙ্গল গ্রহের উপগ্রহ ডিমোস এবং ফেবোস। উপগ্রহের এই ধারণার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম উপগ্রহকে। উপগ্রহের সংগা অনুযায়ী আমরা জেনেছি কোনো বস্তু নিদির্ষ্ট শর্ত সাপেক্ষে গ্রহের চারিদিকে ঘুরলে তাকে উপগ্রহ বলে। যেহেতু কৃত্রিম উপগ্রহ সেই শর্ত পূরণ করে তাই কৃত্রিম উপগ্রহকে উপগ্রহ হিসেবে ধরা হয়। মূলত কৃত্রিম উপগ্রহ একটি বিশেষ ধরণের রকেট। এটি স্বাভাবিক বা প্রাকৃতিক উপগ্রহের মত নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরতে থাকে। সাধারণত টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্কের জন্য এবং আবওহাওয়ার তথ্য গ্রহণের জন্য কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যবহার করা হয়। কৃত্রিম উপগ্রহের ইতিহাস সম্পর্কে বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় অবিভক্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের কথা। কেননা মহাকাশে প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ উপক্ষেপনের কৃতিত্ব তাদেরই। ১৯৫৭ সালের ৪ঠা অক্টোবর স্পুটনিক-১ নামের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহটি সোভিয়েত ইউনিয়ন উৎ।ক্ষেপণ করেন। এই কৃত্রিম উপগ্রহটির নকশা করেছিলেন সের্গেই করালিওভ নামের একজন ইউক্রেণীয়। একই বছর তারা স্পুটনিক-২ নামের দ্বিতীয় কৃত্রিম উপগ্রহটি উৎেক্ষেপ করেন। প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ অর্থা‌ৎ স্পুটনিক-১ ছির জীববিহীন কিন্তু এবার তারা উপগ্রহটির সাথে লাইকা নামের একটি কুকুর উৎপক্ষেপণ করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল প্রথম মহাকাশে গমনের সুযোগপ্রাপ্ত এই সৌভাগ্যবান কুকুরটি পৃথিবীতে আর জীবিত ফেরত আসতে পারেনি। তাপনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কুকুরটি উৎভক্ষেপনের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই মারা যায়। এরপর আরও অনেক দেশ অনেক কৃত্রিম উপগ্রহ প্রেরণ করেন। কৃত্রিম উপগ্রহের ইতিহাস সম্পর্কে আমরা আংশিক ধারণা পেলাম। এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক এটি কিভাবে কাজ করে। কৃত্রিম উপগ্রহ বেশ ভারী একটি বস্তু ।কোনো বস্তুকে পৃথিবীর বাইরে উৎকক্ষেপণ করার জন্য মুক্তিবেগ অতিক্রম করতে হয়। মুক্তিবেগ বলতে বোঝায় সেই পরিমান বেগ যে বেগে কোনো বস্তুকে পৃথিবীরে বাইরে নিক্ষেপন করলে এটি আর পৃথিবীতে ফিরে আসে না। এখন যেহেতু কৃত্রিম উপগ্রহ একটি ভারী বস্তু তাই এটিকে পৃথিবীর বাইরে সহজে উৎিক্ষেপণ করা কষ্টকর। তাছাড় উৎরক্ষেপিত হওয়ার পর এটিকে অনেক অনেক বছর ধরে পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরতে হয়। এজন্য ভারী একটি বস্তুকে চালানোর জন্য অনেক জ্বালানীর প্রয়োজন । কৃত্রিম উপগ্রহকে উৎৃক্ষেপণ করার সময় এর কয়েকটি অংশ আস্তে আস্তে ত্যাগ করা হয়। এরপর যখন উপগ্রহটি তার কক্ষপথে চলে যায় তখন কেবলমাত্র মূল অংশটি উপগ্রহে হিসেবে বিদ্যমান থাকে । এরপর কক্ষপথে ঘূর্ণায়মান কৃত্রিম উপগ্রহের গতিকে এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয় যাতে এর গতির সেন্ট্রিফিউগাল ফোর্স বাইরের দিকে শক্তি প্রদান করে। কিন্তু বিপরীত দিক থেকে পৃথিবীর মাধ্যকর্ষণ শক্তি কৃত্রিম উপগ্রহটিকে তার কক্ষপথে ধরে রাখে। ঠিক একেবারে প্রাকৃতিক উপগ্রহের মত । উভয় শক্তি কৃত্রিম উপগ্রহকে ভারসাম্য প্রদাণ করে। এজন্য উপগ্রহটি পৃথিবীর চতুর্দিকে ঘুরতে থাকে। তার ঘূর্ণন কিন্তু গোলীয় নয়। বরং উপবৃত্তাকার পথে এটি পৃথিবীর চারদিকে একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে বাঁধাহীন পথে ঘুরতে থাকে। কৃত্রিম উপগ্রহগুলোতে উৎ ক্ষেপনের সময়ই পর্যাপ্ত পরিমান জ্বালানী সরবরাহ করা হয়। কেননা মহাকাশে রিফুয়েলিং বা পুনরায় জ্বালানি সরবরাহ করার কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে কিছু কিছু কৃত্রিম উপগ্রহ সূর্যালোকের সাহায্যে জ্বালানির চাহিদা পূরণ করে। সুতরাং বলতে হয় কৃত্রিম উপগ্রহের নির্দিষ্ট আয়ুষ্কাল রয়েছে। যদি কৃত্রিম উপগ্রহে কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি না থাকে তবে এটি তার নির্দিষ্ট আয়ুষ্কাল পর্যপ্ত টিকে থাকবে। কেননা পৃথিবীর বাইরে পৃথিবীর মত কোনো ঝড় বৃষ্টি নেই। এবার আসুন জেনে নিই কৃত্রিম উপগ্রহকে কোন কোন ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়। কৃত্রিম উপগ্রহের ব্যবহার এককথায় বলে শেষ করা যাবে না । আধুনিক বিশ্বের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে এর ব্যবহার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে টেলিকমিউনিকেশন সেক্টরে তথ্য আদান প্রদানের ক্ষেত্রে । যেমন- টেলিভিশনের অনুষ্ঠান সম্প্রচার করার জন্য কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যবহার করা হয়, ইন্টারনেটের যাবতীয় তথ্য আদান প্রদান কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে হয়, তাছাড়া আবওহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়ার জন্যও কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আর আধুনিক বিজ্ঞানের এইসব বিষ্ময়কর আবিষ্কার ছাড়া আমরা কোনোমতেই চলতে পারব না। সুতরাং, এটা সহজেই অনুমেয় যে কৃত্রিম উপগ্রহ আধুনিক বিশ্ব গঠনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য।

No comments:

Post a Comment