‘নিশীথ রাত্রির সদস্য’ হুসাইন মুহাম্মদ কামুরজ্জামানের প্রথম কাব্যগন্থ। এর সবগুলো কবিতাই আমি পড়েছি। কবিতাগুলোয় মানবপ্রেম, প্রকৃতিপ্রেম,রোদবৃষ্টি ভালোবাসা সহ
স্বদেশের প্রতি অগাধ ভালোবাসা প্রতিভাত হয়েছে। সত্যিকার অর্থে, এদেশের ষোলকোটি মানুষের সিংহাভাগই তাদের কাঙ্খিত স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারছে না।
সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা যে বিঘ্নিত হচ্ছে তাও প্রতিধ্বনিত হয়েছে কবির অধিকাংশ কবিতায়।
গণতন্ত্র আর স্বৈরতন্ত্রের মধ্যকার ফারাকটুকু সুস্পষ্টভাবেই বেশিরভাগ কবিতায় উঠে এসেছে। ‘একুশের চেতনা’ আর ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’
যে কেবলই অধিকাংশ রাজনীতিবিদের স্বার্থ হাসিলের একটি কূটকৌশল তাও ধরা পড়েছে এ গ্রন্থের কবিতায়। এদেশের বর্তমান রাজনীতি যে মানব কল্যাণের চাইতে স্বকল্যাণে ব্যবহৃত হয়
তাও পরিলক্ষিত হয়েছে এ কাব্যগ্রন্থে। কেননা, কবিমাত্রই কালিক ও যুগযন্ত্রণা বেদনাহত হৃদয়ে অনুভব করে থাকেন। নতুন প্রজন্মের কবি হিসেবে তাও উলব্ধ হয়েছে কামরুজ্জামানের ভাবনায়।
সহজ-সরল প্রকাশ ভঙিতে তার করিতায় উপমা-উৎপেক্ষা কম-বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। তার এ গ্রন্থটি পাঠকের কাছে সমাদৃত হবে বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস। কব্যচর্চায় উত্তরোত্তর তিনি সমৃদ্ধ হোন, এটাই আমার আন্তরিক কামনা।
আবুজাফর আবদুল্লাহ্
সাবকে পরিচালক
বাংলাদেশ বেতার।
নিশীথ রাত্রির সদস্য হুসাইন মুহাম্মদ কারুজ্জামান
প্রকাশানায় ভবো রঞ্জন বেপারী
নন্দিতা প্রকাশ
বিচিত্রা বিই মার্কেট ( ৩য় তলা)
৩৬, বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০
ফোন: ৭১১০১২২, ০১৭১৬-৩১৭৯৪২
পরিবেশনায় নিউ নেশন লাইব্রেরী
পুরান লেন, জিন্দাবাজার, সিলেট-৩১০০
বুক সেন্টার
৩৪, নিউ মার্কেট, রাজশাহী
স্বত্ব লেখক
প্রকাশকাল অমর একুলে গ্রন্থমেলা ২০১৪
প্রচ্ছদ অনুপম কর
বর্ণবিন্যাস নন্দিতা কম্প্রিন্ট
মুদ্রণ নন্দিতা প্রিন্টার্স
মূল্য ১২০ টাকা
Nishitho Ratrir Sarasso (poems) by Hussain Muhammad Kamruzzaman
Published by Bhabo Ranjon Bepary, Nandita Prokash
Bichitra Boi Market (2nd Floor) , 36 Banglabazar, Dhaka-1100, Bangladesh
Phone: 7110122, 01716317942, 01190-466506
Email: nandita_bhabo@yahoo.com
Website: www.nanditabd.com
Price: Tk. 120 U.S.$4 only.
ISBN 978-984-90596-5-1
আমার ভালবাসার অরণ্য
আমার ভালভাসার অরণ্যে দাম্ভিকতা নেই।
আছে মমতা ঘেরা সবুজ ভালবাসা।
আমার ভালবাসার অরণ্যে ষোলকোটি মানুষের বাস,
কোটি কোটি স্বপ্ন একটি পরিবার।
আমার ভালবাসার অরণ্যে পাখি ওড়ে, কোকিল গান গায়
স্বাধীনতার গান।
আমার ভালবাসার অরণ্যে হাজার ফুল ফোটে
প্রজাপতি ওড়ে
নদী বয় শ্যামল মাঠ চিরে।
আমার ভালবাসার অরণ্যে হানা দেয় দূর্বৃত্ত কোনো ঝড়,
তবু আমার ভালবাসার অরণ্য দাঁড়িয়ে থঅকে
ভালোবাসা নিয়ে কারো অপেক্ষায়।
আমার ভালবাসা-১
পৃথিবীতে কোনো এক শ্যামল বদ্বীপে
আমার বসবাস।
মা-বাবা, ভাই-বোন, বন্ধু স্বজন
প্রকৃতির রূপ, মায়াবী ঢেউ, নদীর কলতান
রাতের জ্যোৎস্না, শুকতারা,
এই বাংলা
আমার ভালবাসা।
আমার ছোট কুটিরে বৃষ্টি ঝরে
জোনাকিরা মেলা আলো দেয়, পরী নামে
রাতের শেষে সূর্য হাসে পাখির ডাকে,
প্রভাত আলোয় শিশির সিক্ত বাংলা
আমার ভালোবাসা।
কবিতা
জানালার কাছে রেলিং এর উপর
একটা কাক, কাকা করছে।
তার তৃষ্ণার্ত চোখের পানির মতো।
হৃদয় থেকে বেরোল একটি কবিতা
হাজার কবিতা থেকে বেছে।
নিস্তব্দ কক্ষ, দেয়ালে টাঙানো পোস্টার
রূপসী বাংলার
হৃদয় আবেগে একাকার
কারো অপেক্ষায়।
নীরব মনঃকষ্ট, নিথর বেদনায়
কোনো এক কবি লিখেছে কবিতা
কবরের মতো নিস্তব্দতায় একাকী একা বসে।
চাঁদ
খোলা আকাশের নীচে নির্জন মাঠে
একাকী বসে থাকা।
চাঁদ সেওতো নীল আকাশে
সাগরের গহীন জলের মত একা,
তার সাথে মিশে
হৃদয়ের রং তুলিতে ছবি আঁকা।
নীল আকাশ কেনো এতো রং বদলায়
কোনো এক শিল্পীর ক্যানভাসের মতো।
পৃথিবীর এতো ছোটো জায়গায়
আমার কুটির সে কী চেনে?
তাকে নিয়ে আমার এতো ভাবনা সে কী জানে?
কতো কবিতা লিখব ভেবেছিলাম
শরীরের শিহরণে যাই ভুলে।
চাঁদ তুমি আমার কুটিরে কেনো আলো দাও না
তুমি দাঁড়িয়ে থাকো ঠিক আমার কুটিরের ওপরে
চেয়ে রবো তোমার দিকে শতকাল
তোমার স্নিগ্ধ আলো ভরে দেবে শরীর মন
আমার বাড়ির আঙিনা।
অন্ধকার
অন্ধকার, অন্ধকার, চারিদিকে শুধু অন্ধকার
কালো রাতের শেষে কবে ফুটবে আলোর পথ।
তোমাদের বজ্র কন্ঠে কবে বেরোবে
রক্ত শ্লোগান
বাঙালির স্বপ্নে থেমে থেমে হানা দেয় দাঁড় কাক।
একাত্তরের স্বপ্নভরা স্বর্ণকুটির
আজো কেনো হয় রক্তে লাল।
পূর্ণ স্বাধীনতা কবে আসবে?
আসবে কী আগামীকাল?
স্বপ্নের পাশে থাকে চোরাবালি
আমার স্বপ্নের পাশে থাকে চোরাবালি
হারিয়ে যাবার
আমার কলমের নিবের এক কোনে আছে
অসভ্য জানোয়ার
সবুজ ঘেরা বনানীর পাশে
নরখাদকের বাস।
আমার চারিদিক ঘিরে আছে
স্বর্ণলতার মত পেঁচানো
জীবাণুবাহী ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়া।
আমি হারিয়ে যেতে চাই না।
আমার স্বপ্ন কলম, বনানী
উদ্ভাসিত হোক কল্যাণে
আঁধার থেকে আলোর দিকে
আমি চেয়ে আছি চেয়ে আছি
সেই প্রত্যাশায়।
প্রণয় আচ্ছন্ন-১ (হিমুর জন্য)
আজো নাকি হৃদয়ের রং বদলায়
প্রজাপতির মেলা বসে।
প্রজাপতি কি গান গায়
নাকি সুর তোলো।
বসন্তের ফুলে ভ্রমর মধু পায়।
সে কি পায়।
হৃদয়ের রঙে প্রজাপতি কি হারায়
নাকি শুধু বসে থাকে
কোথাও যাবে বলে।
প্রজাপতি কি প্রণয় আচ্ছন্ন
নাকি আমি
পাখায় তার বাতাসের ঢেউ
সে কি সত্যিই হারায়
না আমি হারাই
নাকি দুজনায়
নাকি অন্য কেউ।
আমার ভালবাসা-২
পৃথিবীর প্রিয় কোন ভূখন্ড
সবুজের গহীন অরণ্য
ভোরের আকাশে সাদা বক স্বাধীন
বসন্তের আম্রকানন
রাতের আঁধারে কিংবা জ্যোৎস্নার আলোয়
হাস্নাহেনার সুবাসে বাংলা
আমার ভালোবাসা।
আমার বাংলা
সূর্জের নির্গত আলো
চাঁদের জ্যোৎস্না
আকাশের রংধনু
কৃষ্ণচূড়ার লাল ফুল
বঙ্গোপসাগরের বুকে চাই অন্য কোনো দ্বীপ
আগ্নেয়গিরি থেকে স্বর্ণের লাভা
আমি চাই না।
আমি চাই শীতের সকালে
চাদর জড়ানো ভালোবাসার মতো ভালোবাসা
আমার বাংলা।
ভবিষ্যতের স্বপ্নগুলো
হয়তো কৃষকের চুলগুলো ঝরে যাবে দুঃশ্চিন্তায়
তবুও বৃষ্টি পড়ে না।
শুশ্ক খরা মাটি অপেক্ষায়
এক পশলা বৃষ্টির।
বৃষ্টি নেই।
ধানের চারাগুলো শুকোয়।
আবার কখনো না চাইতেই বৃষ্টি
শুধু চলা, তারপর সৃষ্টি
এক বন্যা।
কৃষকের মতো, আমার চাওয়াগুলো
কখনো অপূর্ণ থাকে,
কখনো পাবার ভিড়ে
শঙ্কিত থাকে ভবিষ্যতের স্বপ্নগুলো।
শূন্য হৃদয়
শেষ বিকেলের পড়ন্ত আকাশ
ঠান্ডা হাওয়া প্রতিদিন অচেনা কেনো হয়?
প্রতিদিন কেনো বদলায় তার ভাব।
আমি পৃথিবীর ছোট মানুষ
কেনো তার মায়াজালে
দেখি চারদিক ঘোরে
অবুঝ বালকের মতো
নিত্যদিনের অচেনা পৃথিবীকে।
কেনো তাকে ভালো লাগে
কাছে আছে বলে
নাকি পাই না বলে
নাকি শূন্য হৃদয় ভরেছে বলে।
নবমিতা
তোমাকে নিয়ে লেখা আমার প্রথম কবিতা
কী নাম দেবো পাই না ভেবে
অবশেষে নাম দিলাম নবমিতা।
দিনের শেষে রৌদ্রস্নাত বিকেলে
অজস্য ব্যথা আর যাতনার ফাঁকে
তখন বোধহয় হাঁসগুলো খেলছে দূরের বিলে
হৃদয় আকাশে মেঘগুলো ছবি আঁকে।
প্রকৃতির এমনি মুহূর্তে মনে হয়
তুমি আর আমি মুখোমুখি দাঁড়িয়ে
সামনে বিশাল মাঠ পাতাঝরা বিকেল
হৃদয়ে তরঙ্গ ওটে আর যেনো না যাই ফিরে।
তারপর
দিন যায় রাত যায়
তবুও তোমার নাম পাই না খুঁজে
অবশেষে- নাম দিলাম নবমিতা।
প্রণয় আচ্ছন্ন-২
বাতাসে শুকনো পাতা ওড়ে
ঘনকালো চুলের মতো বসন্তে ফুল ফোটে
বর্ষায় বৃষ্টি ঝরার মতো
সমুদ্রে ঢেউ ওঠে,
সে র্যের রক্তিম আভায়
প্রেমপত্র হাতে কোনো যুবক
কারো অপেক্ষায়।
সে কি তোমার মন রাঙায়, নাকি স্বপ্নতত্ত্ব দেয়,
তুমি আর সে কি সত্যিই প্রণয়া-বিভোর
নাকি পৃথিবী আর তুমি।
তুবও তো আছি
যত দূরে থাকো না কেনো
তুবও তো আছি সাদা আসমানের নীচে।
যতো দূরে থাকো না কেনো
তবুও তো হাঁটি একই মৃত্তিকার বুকে
এখনো মাটি হইনি।
যতো দূরে থাকো না কেনো
তুবও তো ঘুমোই রাতের আঁধারে,
পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তার তীরে।
যতো দূরে থাকো না কেনো
তুবও তো আছি আমার ভালবাসার অরণ্য
বাংলাদেশে।
দুরন্ত কিশোর
আমি লাশের ভাগাড় থেকে উঠে আসা
দুরন্ত কিশোর।
পদ্মার উদ্দাম জলে, ছেঁড়া পালে
বৈঠা বাওয়া
আমি এক দুরন্ত কিশোর।
আমার শৈশব, কৈশর, যৌবনের বাংলা
অপেক্ষায়
চিরনিদ্রায় শায়িত হবার বাংলা
আমার ভালোবাসা।
হাজার শকুনেরা এখনো পাখা মেলে আকাশে!
একাত্তরের রক্তে তারা মাতাল হয়েছিল
শাণিত ঠোঁটে খেয়েছিল লক্ষ লক্ষ লাশ
টেনে হিঁচড়ে নিয়েছিল নারীর শাড়ীর আঁল।
তবুও কি শকুনদের সাধ মেটেনি?
আজো কোনো আকাশে ওড়ে।
আমি লাশের ভাগাড় থেকে উে আসা
দুরন্ত কিশোর।
তীর হাতে নয়, অস্ত্র হাতে
আমি একাকী নই, সঙ্গীসহ
এক এক করে তোদের
করে দিব নির্বংশ।
আমি মুসলিম, আমি বাঙালি
এই বাংলা আমার দেশ
এই বাংলা আমার ভালবাসা।
বাড়ি ফেরা
শীতল হাওয়ার মধ্যে ফিরছি বাড়ি
আমি একা। প্রায় জনশূন্য রাস্তাঘাট।
হলদে চাঁদের চারদিকে পাহাড়ের মতো
মেঘ জমেছে।
তারাগুলো উজ্জ্বল শিশির বিন্দুর মতো।
রাস্তার পাশে মাঠ
বৃষ্টির পানিতে সাদা হয়ে গেছে ছোট বন্যায়।
কাটা ধানগাছ থেকে নতুন চার বেরিয়ে
বাতাসে দুলছে।
কলা বাগানের পাতার শব্ধ
দু’চারখানা ঘরবাড়ি।
আমি চলেছি একা।
রাস্তার দুপাশে সারি সারি গাছ
পুকুরে মাছের পাখা ঝাঁপানোর আওয়াজ
নানা পোকার ডাক, পৃথিবীর অচেনা সুরের মতো
বহুরূপী আকাশের রঙ
নিত্যদিনের সাথে মিশে একাকার।
আমার স্বাধীনতায় আছে
আমার স্বাধীনতায় আছে
বাবার আদার, মায়ের আদার
হৃদয়ের কলধ্বনি।
আমার স্বাধীনতায় আছে
কবির কলমের মুক্ত লেখনী
খবরের কাগজের মুক্ত সম্পাদকীয়
মুজিবের প্রেরণার সেই সংগ্রামী বাণী।
আমার স্বাধীনতায় আছে
হৃদয়ের রঙ তুলি আর রঙের বাড়ি।
আমার স্বাধীনতায় আছে
জাতির কাঙ্খিত পতাকা
নৌকা বাইচেরে সাজানো রঙিন নৌকা।
আমার স্বাধীনতায় আছে
মাতৃভাষায় গল্প শোনানো একুশের কবিতা।
আমার স্বাধীনতায় আছে
‘আমার সোনার বাংলা
আমি তোমায় ভালবাসি।’
নিশীথ রাত্রির সদস্য
আমি এক নিশীথ রাত্রির সদস্য।
রাতের কালো অন্ধকার আর আমার
গাঢ় অন্ধকার মিলে তৈরি হয়েছে নিশীথ রাত্রি।
আমি তার একমাত্র সদস্য।
রাতের অন্ধকার আমাকে ডাকের
আমি দেখি দুরন্ত মেঘলা আকাশ
মেঘ থামে, তুবও চাঁদ আলো দেয়
তারা ফোটে।
আমার আকাশে কেনো তারা ফোটে না,
মনের জলে বান হয়ে যায়
তবুও শাপলা পদ্ম ফোটে না।
আমার জলে মাছরাঙা মাঝ ধরে না,
হাঁসগুলো শামুক কুড়ায় না, খেলে না
কারণ, আমি নিশীথ রাত্রির একমাত্র সদস্য।
সমুদ্রের ডাক
সমুদ্র দেখেছো, সমুদ্রের গর্জন শুনোছো?
ভয়ংকর উঁচু উঁচু জলরাশি
তার ডাক বোঝে দক্ষ নাবিক কিংবা মাঝি
আর গণতন্ত্র বোঝে রাজনীতিবিদ
যদিও তা অণুপস্থিত এদেশে এখন।
কখনো হাওয়ার তোলে জালের স্রোতে
ছুটে চলে তীরবেগে জাহাজ
হয়তো এক ফাঁকে মেঘেরা করে সাজ
কোনো হিংস্র বাঘের মতো শিকারের অপেক্ষায়।
হয়তো বোঝে দক্ষ নাবিক
এসেছে অনেক পথ
পাখির ডানায়
চারদিক ঘিরে আসে সমুদ্র যৌবন
প্রলয় ভূমিকায়।
মহাবিপদ...
ওহে রাজনীতিবিদ, গণতন্ত্র
যেনো না হয়,
না ফেরার পথ
যেনো না হয় ঝড়ের যন্ত্র
হারিয়ে যাবার আগে
নিয়ে নাও বাগে
আমার ভালবাসার অরণ্য।
হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো
সাদা মেঘ আকশে ভরে শূন্যতা
সীমানার প্রাচীর ঢেকে।
কখনো কালো মেঘ ছোটে এদিক ওদিক
শুঝু তার ব্যস্ততা
জলদেবে কাকে?
ঘুরে সারাদিন রত্রি বেলা।
কখনো বৃষ্টি নামে
শ্রাবণের দিনে
ঘুরে আসে স্বপ্নের দিন
কৈশোর তারুণ্য
এই বৃষ্টি ভেজা মনে।
মাতৃভূমির কথা
বাংলার ইতিহাস শুনছে দৃপ্ত পৃথিবী
যুগের পরতে পরতে রয়েছে আঁকা ছবি।
গণহত্য, অত্যাচার , নিপীড়ণ, নির্যাতন
দুঃখ, কষ্ট, জরাজীর্ণ আহরণ।
বায়ান্ন, উনসত্তর, একাত্তর।
মুক্তিকামী মানুষ
এঁকেছিল স্বাধীনতার পোস্টার ফেস্টুন
এক হাতে অস্ত্র
অন্য হাতে লাল সবুজের পতাকা
যেনো মুক্তির সব কথা আঁকা।
বাউলের হাতে একতারা নেই
কবির হাতে কলম নেই
মাঝির মুখে ভাটিয়ালি গান নেই
সবাই ধরেছে অস্ত্র
দেশকে বাঁচাতে ব্যস্ত।
ওরা বলে, লাল সবুজের পতাকা চাই
বুকের ভেতর স্বাধীনতা নাই
লাল সবুজের পতাকা চাই-চাই-চাই।
স্বাধীনতার জন্যে লাখো শহীদের প্রাণ
রেখেছে বাংলাদেশের মান।
লাখো শহীদের রক্ত
মিশে যেনো বাংলা এখন মুক্ত।
ক্লান্ত বিকেল
ক্লান্ত বিকেলের পড়ন্ত রোদে
চলো না হাঁটি কৃষ্ণচূড়া রোডে।
মনেরে ডায়েরীতে লিখি আরেকটি দিন।
হয়তো চাঁদের জ্যোৎস্না থাকবে না
সে র্যের আলো কম কিসে
পৃথিবীর সব প্রাণ আছে তার সাথে মিশে।
ক্লান্ত বিকেলের পড়ন্ত রোদে
চলো না বসি, ব্যস্ততায়
কোনো বটতলা মোড়ে।
জীবনের গল্প করি
হাওয়ায় উড়িয়ে দেয়া দিনগুলোর।
কারো অপেক্ষায়
(মানিকগঞ্জের রাকিব ভাইকে)
পাঁচ ফুট দু’ইঞ্চির দেহটায় আছে মায়াবী চোখ
হাসি সাদা মেঘের মতো পবিত্র।
তার দিকে তাকালে দেখতে পাই
অশ্রুসিক্ত চোখের ভাষা
সেখানো হয়তো বেঁধেছিল
কোনো প্রেয়সী বাসা।
দিনকে দিন যায়, কেঁটে যায় বছর
আকাশের তারা নিভে যায়
ভালোবাসা মরে না।
রাকিব ভাইয়ের অশ্রু ঝরে
মনের সাগর ভেসে যায়,
তারপরেও
বাঁচে শুধু আশায়
কারো অপেক্ষায়।
মহাবিপদ সংকেত
এক অন্ধকার,এক অন্ধকার
অমাবশ্যার চেয়েও গহীন অন্ধকার
ধেয়ে আসছে সহস্য বেগে
এই বাংলাদেশে।
মহাবিপদ সংকেত, আজকের
‘গণতন্ত্র, রাজনীতি’
ভাষা, সাহিত্য,সংস্কৃতি, সভ্যতা, চেতনা, অবহেলিত।
প্রাণ পুরুষ, ভাষা সৈনিক, একাত্তরের রানঙ্গন কাঁপানো
বীর মুক্তিযোদ্ধারা
একে একে পাড়ি দিচ্ছে না ফেরার দেশে।
আর আমরা অরক্ষিত ষোলো কোটি জনতা।
আজকের রাজনীতি ও গণতন্ত্র
যেনো লুটপাটের মূলমন্ত্র।
ওহে লক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধারা
গণতন্ত্রের উত্তাপে কাঁদে ষোলোকোটি আমজনতা কিংবা
ছেলে হারানোর বেদনায় কোনো অসহায় জননী।
আজো বইগুলো র্যাকে তোলা গভীর মমতায়।
তবে তোমদের এ কেনো নীরবতা।
তোমাদের ভাষা কী বন্ধ হয়ে গেছে?
পা কী খোঁড়া হয়ে গেছে?
দৃষ্টি কী হারিয়ে গেছে ?
আবার জ্বালাও একাত্তরের মশাল।
সুষ্ঠু রাজনীতি হোক পুনঃপ্রতিষ্ঠিত।
ধেয়ে আসা মহিাবিপদ দূর হয়ে আসুক রাঙাপ্রভাত।
অরণ্যে তুমি নেই কেনো
আমার ভালোবাসার অরণ্যে আছে
রয়েল বেঙ্গল টাইগার, সিংঞ, হায়েনা, গোখরা
উন্মত্ত পদ্মা মেঘনা যমুনা
ভেঙে দেয় ঘরবাড়ি।
আমার ভালোবার অরণ্যে আছে বঙ্গোপসাগর
হঠাৎ আসে সিডর, নার্গিস, আইলা, ভূমিকম্প, জলোচ্ছ্বাস।
আমার ভালোবাসার অরণ্য কালো করে অমবশ্যা
লাল রক্তে দেশ গড়ে গণতন্ত্র।
এতো সব ভয়ংকরেরা থাকে আমার ভালোবাসার অরণ্যে
তবে তুমি নেই কেো
তুমি আসো না কেনো আমার ভালোবাসার অরণ্যে
শিশির ভেজা ভালোবাসা নিয়ে।
পারফিউম
বাংলা তোমার বুক থেকে ভালোবাসার পারফিউম ছড়াবে
সারা পৃথিবীতে
বকুল, বেলী,জবা,কামিনী গোলাপ কিংবা হাস্নাহেনার
পারফিউম নয়
ষোষ কোটি হৃদয় থেকে বেরোনো ভালোবাসার পারফিউম।
সেই টানে যেনো আসো কোনো মহামানব
মুসলিম চেতনার অগ্রনায়ক
দিন মজুর কলি কামার, মুমিনের নেতা
বাংলার সফল রাষ্ট্রনায়ক কিংবা সারা পৃথিবীর।
আজো বসে আছি
ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল মেঘলা আকাশের নিচে
সেই দিনের প্রতীক্ষায়।
শেষ দেখা
(সুরভী আক্তার সূচী স্মরণে)
তোকে শেষ দেখেছিলাম ক্লাশে
মনে হয়েছিল ভালোই ছিলি।
কিন্তু দেখিনি তোর চশমার ভেতরের
অশ্রু অনল চোখ
দেখিনি তোর কপালে মৃত্যু ক্ষুধা লেখা।
দেড়শ কিলোমিটার পথ, তোর বাড়ি যাওয়া
তারপর অঘটন।
জানলে তোকে যেতে দিতাম না।
তোর শুভ্র অন্তরে সাদা মেঘ কালো হয়েছিল
বৃষ্টি পড়েনি রক্ত ঝরেছে,
তোর চোখ দুটো এতোই ক্লান্ত হয়েছিল যে,
রাতের শেষে জেগে ওঠে নি।
রূপালি আলোয়, সোনালী আলোয়
এখন শুধু ঘুমোবার পালা।
তুই নেই্
কলেমের কালিক্ষয় হয়েছে,
তোকে নিয়ে কবিতা লেখা হয়নি।
হৃদয়ের জলে বান হয়েছে,
সেই বানের জলে জলরঙ পরী হয়ে উঠে আয়
একবার।
শুধু একবার।
সবকিছু কি এক
আকাশের জ্যোৎস্না বলে কথা
চাঁদের সাথে তারার মেলার তুলনা
বাস্তব বনলতা আর তার আলপনা
সব কিছু কি এক?
পদ্মার ইলিশ আর মেঘনার ঘোলাজল
আমার গ্রাম আর অন্য গ্রাম
আমার দেশ আর অন্য দেশ
রঙ তুলি আর ক্যানভাস
সবকিছু কি এক?
আমার ভাঙা ঘর,পর্দাহীন জানালা
রাতের জ্যোৎস্নার লুকোচুরি খেলা
মেসের কোণে বসে থাকা
আর রাত গোনা, কবে বাড়ি যাব
তুমি কিংবা অন্য কেউ, আলো ছায়া
সবকিছু কি এক?
বাংলাদেশঃ গণতন্ত্র
দেশের গণতন্ত্র
যেনো মানুষ মারা যাঁতাকল
এই বিশ্ববেহায়ার দামামা ভোজন
শরীর মাংস দেহের বল।
দেশের গণতন্ত্র
যেনো কয়েকের উত্তারধিকার দ্বন্দ্ব
হরতাল-অবরোধ গুঁড়ি ফেলে রাজপথ বন্ধ।
দেশের গণতন্ত্র
ফেলানির মতো কাঁটাতারে এখনো ঝুলন্ত
বাঙালি কৃষিকের লাঙল ভাঙা যন্ত্র।
দেশের গণতন্ত্র
কালো টাকা সাদা করে চালান
কারো কারো নির্লিপ্ত বাসনায় দেশ চাম্পিয়ন।
দেশের গণতন্ত্র
সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস, ককটেলে ঝলসানো শরীর
মিছিলে গুলি, নেতার বুলি, শীতের প্রহর
আজো কেনো শত মায়ের কান্না শুনি।
দেশের গণতন্ত্র
সংসদে কাঁপে স্বরযন্ত্র
হ্যাঁ, হ্যাঁ, হ্যাঁ, হ্যাঁ
আইন পাশ
বাতাসে সজীব নিংশ্বাস
সব মাফ।
বছর কাটে,
শুধু পালা করে পালা বদল
সংসদে নানা নীতি, কূটকৌশল।
কিছু কথা
কিছু বলার পরও থেকে যায়
কিছু কথা অবশিষ্ট মেঘের মতো।
যদিও মন থাকে নির্ভয়
বেলা-অবেলায়।
গ্রীষ্মের হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ের মতো
কিংবা শ্রাবণের আকাশে হঠাৎ বৃষ্টির মতো,
কিছু না বলা কথা
ব্যক্ত হয় কারো কাছে।
শুকনো পাতার শূন্য বনে
শিহরণ জাগায়
যা ছিল হয়তো তোমার অপেক্ষায়।
গান গাবো
আবেগে আপ্লুত এই সন্ধ্যায়
চারদিকে গাছপালা আর বাতাসের শব্দ
নিভৃত হৃদয়কে দোলিয়ে
শান্ত নদীতে কুসুমের ভালোবাসায়।
সারা বাংলাকে বুকে তুলতে ইচ্ছে করে
নদীতে ভেসে ওঠা চরের তো।
সরল প্রেমিকের মতো,
যদি বাংলা হতো আমার,
তারপরেও বাংলা আমি তোমার
আমি শুধু তোমারই গান গাবো
আমার মতো করে।
শুকনো পাতা
কালো মেঘে আকাশ ঢাকা
সে র্যের বেরোবার পথ নেই।
এরপর হয়তো পাথর ঝড়ে
হারাবো সবাকিছু, আমার ভালোবাসার অরণ্য।
হঠাৎ হঠাৎ
ভেতরের হৃদয়টা কালো মেঘে ঢাকে,
হু হু করে কাঁদে নীলাভ বেদনায়
বৈশাখের বাতাসে লন্ডভন্ড
শুকনো পাতার ওড়াউড়ির মতো।
আমি নিজেই নিজেকে বুঝতে পারি না,
শ্রাবণ আকাশের মতো।
বাংলা
বাংলার আকাশ, বাংলার মাঠ
ডুবিয়েছে আপন হৃদয়ের পাঠ।
চোখ ভরে দিখি সবুজ শ্যামল
আনন্দে হারায় মন।
হৃদয়ে থাকে না ব্যথা
অপরূপা রূপে
যেনো স্বর্গের ভালোবাসা প্রকৃতির সাথে মিশে।
গাঁয়ের আঁকাবাঁকা মেঠোপথ
আম, জাম, কাঁঠাল, শিমুল, নারকেল
আর তালের সুন্দর জনপদ।
বাংলার জারি, সারি, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি
হাসন, লালন, করিমের সুর
দূর থেকে শোনা যায় কন্ঠে সুমধুর।
সুপোরি গাছে চড়ুই পাখির বাসা
অবিরাম
সংগ্রাম
তুবও বেঁচে থাকার আশা।
বাংলার নির্ভয় বিচরণ এই তার ভরসা।
বাংলায় আছে হাজার নদী
এঁকে বেঁকে চলেছে নিরবধি।
নদীর উদ্দাম অশান্ত ঢেউ,
পাল তোলা ছোট নৌকো
দুরন্ত গতি জীবনের লক্ষ্য খুঁজে নেয় কেউ।
শূণ্যতা
শূণ্যের মাঝে শূণ্য পৃথিবী
শুন্যে ভেসে চলা।
একাকী নিরালা ভাবি
অঙ্কের শূণ্যটাই শুধু শূণ্য নয়
নিথর দেহ মটিতে শয়ান
প্রাণ তুই শূণ্যে চলে যাবি।
তাই শূণ্যতা বড় ভালোবাসি।
কল্পনার দিগন্ত
ঘুমোতে যাবার আগে
রাতের আকাশ হৃদয় ভরে দেখি।
তারপর
ঘরের একটা জানাল খুলে রাখি
রূপালি আলোয়
যদি কিছু ভাসে আকাশের গায়
মনের কল্পনায়
একটানা চেয়ে থঅকি যতোক্ষণ পারি
কল্পনার দিগন্তে ভাসতে ভাসতে
হয়তো কখনো ঘুমিয়ে পড়ি।
তারপরও জানালাটা খুলে রাখি।
যদি কেউ
পথ চলতে চলতে
ক্লান্ত জীবনে নামে শূণ্যথা
নিশীথ রাত্রির মতো।
যদি পাশে দাঁড়ায় বন্ধু কেউ
মুছে যায় সব ব্যথা
শিশিরে গাঁ ধোয়ার মতো।
কল্পনার জগতে সব বন্ধুই
কাঁচের আয়না।
ঘেরা পৃথিবীর উদ্যানে
এই ছোট্ট জীবনে
যদি কারো সাথে জন্ম হয় অনন্ত রোমাঞ্চের।
স্বপ্ন দেখায়
কষ্টের দিনগুলোতে
আমার রঙিন কৈশোর স্ব্প্ন দেখায়
সুখ দেখায়
সুখ দেখায়
প্রেরণা দেয়
পদ্মা, মেঘনা, যমুনার উন্মত্ত তীরে, ঘর বাঁধার।
ষাট বছর পার হলেও
ষাট বছর পার হলেও
রক্তের উষ্ণতা এখনো থামেনি।
ষাট পার হলেও
দরাজ কন্ঠস্বর এখনো বন্ধ হয়নি।
ষাট পার হলেও
মেশিনগান এখনো শক্ত হাতে ধরতে পারি।
ষাট পার হলেও
চেতনা ক্যানভাস এখনো কালো হয়নি।
ষাট পার হলেও
সিডর, নার্গিস, আইলা, কালবৈশাখী ঝড়ের
আঘাতে মেরুদন্ড বাঁকা হয়নি।
শুধু ফিশান বিক্রিয়ার মতো স্বপ্নগুলো বাড়ছে
বাংলা তোমাকে নিয়ে।
ফিরে আসা
কেনো ফিরে আসি গ্রামে
প্রতি সপ্তাহে ক্লাশের ফাঁকে ফাঁকে।
ছোট খাল, মাছ ধরার ‘খরা’
সারি সারি গাছ, বাঁশের সাঁকো
ছোট নদী, মৃদু ঢেউ
দুপাশে সবুজ মাঠ
এসব কিছ আছে কি কোথাও গ্রাম ছাড়া।
দুরন্ত বৈশাখের বাতাস ক্ষেতে দোল দেয়
কৃষকের মুখে হাসি ফোটে
মৌমাছি ওড়ে সর্ষে ফুলে
পাখি গান গায়,কদম দোলে
হাস্নাহেনা কামিনী সুবাস ছড়ায়
বৈশাখী ঝড় ঘরবাড়ি কাঁপায়।
হারানো সুর
পথ চলা থেমে যেতে চায়
আঁখি দেখতে না চায়
বাংলার আলো।
বলি, দেখে নাও যতো পারো
এতো সব আলো, কোথা পাবে বলো
বাংলা ছাড়া।
বসন্তের ঝড়ো হাওয়া বিক্ষিপ্ত বালুকারাশি
মাঝে মাঝে জ্যোৎস্নার আলোয়
সাদা হয় কালোনিশি।
মেঘেল ছুটাছুটি আকাশ জুড়ে যেনো লুকোচুরি খেলা।
নাতুন ধানের চারার সাথে বাতাসের কথা,
ভালোলাগার কাঁপন
কখনো একটানা, কখনো থেমে থেমে।
সুখ আর দুঃখের সন্ধিতে পথচলা।
তারপরও কেনো থেমে যেতে চায়
জীবন প্রদীপ, জীবনের বাতিঘর ফিরে পেতে চাই হারানো সুর
যা নিয়ে যাবে জীবন লক্ষ্যের বহুদুর।
বৃষ্টি হয়ে
আকাশের মেঘ যদি হতাম
ভেসে বেড়াতাম সারা বাংলা
বৃষ্টি হয়ে পড়তাম
রুক্ষ মাটির বুকে
সাদা কাশফুলে
কদম ফলে কৃষকের মাথালে নৌকার পালে
মন ঘিরৈ বেড়ে ওটা শরীরে।
মায়ের ভালোবাসায়
পথের শেষে রাত্রি নামবে
নির্ঘুম রাত হবে।
দেখবো চাঁদের আলোয় সবুজ ঢাকা
ঘোমটা দিয়ে থাকা
আমার ভালোবাসার অরণ্য বাংলাদেশ।
হয়তো কারো অপেক্ষায় ঢেকে রাখে ষোল কোটি সন্তান
মায়ের ভালোবাসায়।
N.B. Spelling of the articles are not checked yet. So, there might be some wrong of spelleings. The misspelling will be rewritten in correct form within few days.